একটা আমতলা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরানো কলা ভবনের সামনে। সেই আমতলায় ছাত্রছাত্রীরা একত্র হয়ে জাতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি নিজেও আমার ৫৯ বছরের স্ত্রীকে সেই আমতলার কাছে এক নজর দেখে বিয়ে করি। আমাদের গ্রামে আমাদের দু’একখানা জমির কাছে মাঠের মাঝখানে ছিল আর একটা আমগাছ। আমি যখন সেই জমিতে হাল চাষ বা অন্য কোনো কাজ করতাম তখন দুপুরের সময় আমার ছোট ভাই বাড়ি থেকে মাটির বাসনে করে ভাত এবং ডাল নিয়ে আসতো। গরু দুটোকে দাঁড়া করে রেখে এই আমতলার ছায়ায় বসে আমরা দুজনে ভাত খেতাম। যেহেতু আমরা খুব গরীব ছিলাম, আমাদের কোনো আমোদ উৎসব ছিলোনা। তবে মাঝে মাঝে আমরা ছেলেরা এই আমগাছটার নিচে আগুন ধরিয়ে খ্যাসারি ডালের ছিম ভেজে খেতাম। সে ভাজা ছিমের শ্বাদ এখনো ভুলিনি। এই আমগাছটা আমার কাছে আরো প্রিয় ছিল এই জন্য যে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের উড়োজাহাজগুলোর শব্দ শুনলেই আমি এই গাছটার নিচে পালাতাম। আমি ভাবতাম যে পাইলট আমাকে দেখতে না পেয়ে আমার উপর বোমা ফেলার সুযোগ পাবেনা। আর প্লেনটা ভেঙেচুরে পরে গেলে গাছটা আমাকে রক্ষা করবে।