আমি খুশি যে আমার স্লাইডের স্তুপের ভেতর এই ছবিটি পেয়েছি। যারা এই ভবনে পড়াশোনা করেছেন বা পড়িয়েছেন তাদেরকে এই ছবিটি উপহার দিতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। এই ভবনের সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আমি তার মধ্যে দুটি স্মৃতি বর্ণনা করবো।
১৯৫৮ সালে এক সকালে দর্শন বিভাগের প্রধান ডক্টর গোলাম জিলানি সাদা পাজামা, পাঞ্জাবি এবং পায়ে রাবার স্যান্ডেল পরা ২২ বছর বয়সী এক হ্যাংলা যুবককে নিয়ে দ্বিতীয় তলার ডান পাশে বড় ক্লাসরুমটিতে যান। ড. জিলানি ও যুবক ক্লাশের উঁচু পোডিয়ামে আরোহণ করেন, এবং ড. জিলানি সেই দিন থেকে সেই যুবককে তাদের শিক্ষক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চলে যান। আমি ছিলাম সেই যুবক।
ক্লাশে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮০ থেকে ৯০ জন। আমার সামনে অতো বড়ো ক্লাশ দেখে আমি ঘাবড়ে গেলাম। আমার হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে গেল।। কিন্তু কি যেন একটা হয়ে গেলো। আলহামদুলিল্লাহ যখন আমি আমার বক্ত্রিতা শুরু করি তখন আমার সমস্ত ভয় চলে যায়, এবং তখন থেকে আজ পর্যন্ত ৬৩ বছর ধরে আমার পূর্ব এবং পশ্চিমা দেশগুলিতে ছাত্রদের ক্লাশে বা জনসমাবেশে বক্ত্রিতা প্রদানে কোনো অসুবিধা হয়নি।
এক বছর পর একদিন এক ঘটক আমাকে জানালেন যে তার প্রফেসর সহকর্মীর এক মেয়ে আছে। তিনি আরো বললেন যে প্রফেসর সাহেব একজন সুফী মানুষ এবং তার প্রথম বছর বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মেয়েটি একটি স্বর্ণের মেয়ে (গোল্ডেন গার্ল ). পরদিন আমি আয়শাকে এক ঝলক দেখি যখন সে লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে ঘোমটা মাথায় ভবনের সিঁড়ি দিয়ে সামনের মাঠের দিকে আসছিলো। আমি আমতলার কাছাকাছি ছিলাম। আমি সেদিনই ঘটক সাহেবকে জানিয়ে দিলাম যে আমি এই বিয়েতে রাজি। ১৫/২০ দিনের ভেতর আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো। আলহামদুলিল্লাহ ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে আমরা আমাদের ৬১-তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছি।
