বরিশালের সনামধন্য য়্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসাইন সাহেব একদিন আমাকে লললেন যে তিনি আমাদের কাশিপুর ইউনিয়নের চহঠা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাবেন। তার কথা শুনে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। আমি থাকি পৃথিবীর ওপর পিঠে রেড ইন্ডিয়ান আর এস্কিমোদের দেশে। আমি কেমন করে কাজী সাহেবের মতো মানুষকে আমার গ্রামের বাড়িতে আদর আপ্পায়ন করবো। তবে তিনি যেহেতু আমাদের বাড়িতে যেতে চেয়েছেন, তাকে আমাদের বাড়ি নিতেই হবে। তাই আমি একটা পরিকল্পনা করলাম।
আমি ভাবলাম যে আমি আরো কয়েকজন গন্যমান্য মানুষকে আমন্ত্রণ করে একটা অনুষ্ঠান করবো । আরো ভাবলাম যে একই দিনে আমাদের বাৎসরিক কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবো। আমাদের মেহমানরাই তাদের হাত দিয়ে অসহায় মানুষদেরকে কম্বল তুলে দেবেন।
আমাদের অতিথিদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৮০ জন। তাদের ভেতর ছিলেন অনেক গন্যমান্য ব্যক্তি । রিজিয়া বেগম আপা বাংলাদেশের একজন আইকন। তিনি মহিলা শিক্ষক হয়েও ছেলেদের বরিশাল জিলা স্কুলের হেডমিস্ট্রেস ছিলেন দশ বছর। ১৯৯৩ সালে তিনি বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক মনোনীত হন এবং স্বর্ণপদক পুরস্কার লাভ করেন । ১৯৯৫ সালে তার স্কুল বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ জিলা স্কুল নির্ধারিত হয়। তিনি ঢাকা থেকে বরিশাল এসেছিলেন শুধু আমাদের অনুষ্ঠানে যোগদান করার জন্য। আর একজন মহিলা এসেছিলেন খুলনা থেকে। হেলেনা পারভীন একজন হেডমিস্ট্রেস ডেসিগনেট, ভালো স্কলার ও সুফী সাধক। তিনি আমার একজন নতুন বোন। আমাদের অতিথিদের ভেতর ছিলেন আমার ভাগ্নী জামাই শ্রদ্ধেয় য়্যাডভোকেট মান্নান আকন্দ ও তার স্ত্রী, কাজী সাহেবের স্ত্রী শিরিন ঝর্ণা, আমার বিজ্ঞ বন্ধু মোসাদ্দেক হোসাইন, আমার খালাতো ভাই সুন্দরবন লঞ্চ ফ্লিটের মালিক সাজ্জাদ ঝুন্টু, আমার চাচাতো ভাই শাহজাহান কমিশনার ও তার স্ত্রী নার্গিস, এবং আরো অনেকে। অতিথিদের সংখ্যা ছিল ৮০ জনের মতো।
বাচ্চা ছেলে মেয়ে সহ প্রাপ্তবয়স্ক অসহায় মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ২০০ I আমাদের অতিথিরা তাদের হাতে ১৫০ খানা কম্বল উঠিয়ে দেন। এই প্রসঙ্গে বলতে পারি যে আমরা মাধপ্পাসার একটি এতিম সংস্থায় একই সংখক কম্বল বিতরণ করার বন্দোবস্ত করেছি।
আমরা জুমার নামাজের পর আমাদের অতিথিদেরকে ডিনার পরিবেশন করেছি। এখন প্রশ্ন হতে পারে আমরা কিভাবে ধনী অতিথিদের ডিনার পরিবেশন করলাম, আর গরিব মানুষেরা না খেয়ে চলে গেলো। আমার উত্তর হলো যে আমরা প্রত্যেক মাসে তিরিশ জন অসহায় মানুষকে ডিনার পরিবেশন করি। প্রথম মাসে দাওয়াত করি অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদেরকে, দ্বিতীয় মাসে মহিলাদেরকে, এবং তৃতীয় মাসে বৃদ্ধ পুরুষদেরকে। আমাদের ভুলভ্রান্তি আল্লাহ যেন ক্ষমা করে দেন।
আমার ভাতিজা সাইফুল ইসলাম শাকিল , যে বরিশালে আমার সকল দানশীল কাজ করে, এই অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছে। আমার ভাইঝি জামাই হুমায়ুন কবির এই অনুষ্ঠান আয়োজনে সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে তার ছুটি বাড়িয়ে নিয়েছিল, এবং শাকিলের মা পারভিন ও স্ত্রী মিতু রান্না করার জন্য দুই দিন অনেক পরিশ্রম করেছে। আমি তাদের অবদানের জন্য সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।





+2
Mohammad Humayun Kabir, Lubna Humayun Chobi and 76 others
13 comments
1 Share
Like
Comment
Share